ব্লগে প্রকাশিত হযরত মামুন আব্দুল্লাহ্'র কবিতার সংকলন
ফুলের দোকান
ফুল কিনতে এলাম আমি ফুলের দোকানে
তার এক দোকানে হরেক ফুলের মেলা
তাঁর কয়টি বাগান আছে?
আমার লজ্জা করে
ভিক্ষা মাগি, যেচে খাই
আমার লজ্জা করেনা
আমার লজ্জা শরম নাই,
সিঁদ কাটিনা অন্যলোকের ঘড়ে
আমার লজ্জা করে শরম করে।
টোলের টেক্সট
ডানদিকে সমুদ্র আর বামে পাহাড়
উপরে মহাশুন্য আর পায়ের নিচে কংক্রিট
কোনপথ নিরাপদ ভয়শুন্য
কোনপথ নিরাপদ পানিশুন্য
কোন উতরাই অনায়াস
কোন উড্ডিন বাস্তব অযান্ত্রিকে
নিচে মাটি হলে তবু ভেদ করা যেতো
এতো কংক্রিট- দুর্ভ্যেদ্য
তবে কোনপথ নিরাপদ গমণের...
নতুন কবিতার খসড়া
চোখের অসুখ আমাকে দেখতে দেয়নি কোনদিন ভালো করে
সাতরঙ-নীলাকাশ-প্রজাপতি-মেঘরঙাফুল
অনেকের মুখে অনেক শুনেছি গল্পেরগাথা- দ্যাখা হয়নি-
কোনো কোনো দিনে নাকি পশ্চিমাকাশ হোসেনের রক্তে লাল হয়ে যায়,
পূর্ণিমার রাতে আকাশ আলো করে উড়ে যায় ঝাকেঝাকে সাদা বক,
মেয়েরা যখন রঙিন ফিতেয় চুল বেধে ঝলমল করে দলবেধে
ইসকুলে যায় -তখন নাকি আকাশ থেকে ফুলের পাঁপড়ি ঝরে পরে
নতুন বধুরা যখন তাদের বর কে ওগো বলে ডাকে -তাদের গালে নাকি
ফুটে ওঠে লালপদ্মের রঙ।
এসকল রঙের গল্প শুনে শুনে কেটে গ্যালো একজীবন
দ্যাখা হলোনা পরিষ্কার- আমার যে চোখের অসুখ।
নতুন কবিতার খসড়া-২
জল পড়তে পড়তে পাথরটা ক্ষয় হয়ে গ্যাছে
তার উপরে শ্যাওলারা পেতেছে সংসার
মাথার উপরে প্রতিদিন রোদেরা একটানা
আলো দ্যায়, রোদ দ্যায়। রোদ পড়তে পড়তে
মাথাটাও ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে নাকি?
তার উপরে কারা কারা সংসার পাতছে?
থার্টি-ফাস্টের কবিতা ঃ ছোট-বড় বিলাই এবং ভাল্লুকদের জন্য কবিতা
পৌষ ও মাঘ মাসে বাঘেরা বাইরে থাকে না
ঘড়ের ভেতরে ঘাপি মেরে পিঠা-পুলি খায়
কেউ কেউ বউ-বাচ্চা সহ বেড়াইতে যায়
সাগরে; বরফের উপরে জনিকে হাটায়
আর শুধুমাত্র গুটি কয়েক হতভাগ্য
সৌভাজ্ঞ বঞ্চিত ছোট ছোট বেড়াল
দু'য়েকটা বড় বেড়ালের সাথে
মাঝরাত্রে রাস্তায় দাড়িয়ে
ঠকঠক করে কাঁপে
হিম ঠান্ডায়
জনগণের দোড়গোরে জরুরী সেবা পৌছে দেবার প্রয়োজনে।
থার্টি-ফাস্টের কবিতা ঃযারা গত রাতে অনেক মজা করেছেন
গত রাতে আমি ঘুমায়ে ছিলাম ঘড়ে, বাইরে যাইনি
স্বপ্ন ধরবো বলে ঘুমের জাল পেতে বসে ছিলাম একাই
মাকড়শা যে ভাবে মৃতবৎ পড়ে থাকে তার জালের উপরে
শিকারী যে ভাবে ধ্যনস্থ হয়ে তাকিয়ে থাকে ফৎনার দিকে
কলের অপেক্ষায়- আমিও সেই ভাবে ঘুমের জাল পেতে ছিলাম
গত রাতে, যদিও জানতাম বাইরেই বেশি মজা হবে - হুল্লোরে
স্বপ্ন গাছেরও অধিক বেশি রঙিন ফুল ফুটবে দোকানে দোকানে
একবার ভেবেছিলাম যাবো তারপরে যাইনি যেহেতু
আমার মলিন মুখটাকে শুধুমাত্র স্বপ্নদৃশ্যেই একটু উজ্জ্বল দেখায়।
পাট রচনা
ইসকুলে পাঠ্য বইয়ে পড়েছি পাট বাংলাদেশের প্রধান অর্থকারী ফসল
অথচ যখন বোঝার বয়স তখন দেখেছি আমাদের কোন পাটক্ষেত নেই
সবই অতীত সবই স্মৃতি, এমন কি ক'বছর আগেই ঝুলে পড়ার প্রয়োজনে
ছোটবু আমাকে সঙ্গে নিয়ে দোকান থেকে পাটের রশি কিনেছিল, যেহেতু
আমাদের ক্ষেত ততোদিনে ইরি-বোরো চিংড়ির দখলে চলে গ্যাছে
আমাদের সবগুলো নদী-বিল ও পুকুর ততোদিনে মাছের চাষে ভরে গেছে
সেখানে পাট জাগ দেয়া তখন আইনত অপরাধ, আদমজী চলে গ্যাছে
নেতাদের পেটে
আর গতকাল পত্রিকায় দেখে চমকে উঠলাম - চলতি বছরে দেশের
পাটের বাজারে আগুন ধরেছে, এখন স্নেহ করেও কেউ আর
পাটকে কুষ্টা নামে ডাকছে না, ইহা আবার রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে।
সাদা কাগজটার পাশে, টেবিলের উপরে
একটা সারাটা দিন বৃথাই গেল, কিচ্ছু হলো না
সকাল থেকেই একটা সাদা পৃষ্ঠা টেবিলে পড়ে ছিল
আশে-পাশে অনেকগুলো কলম পেন্সিল আর প্রেরণা ছিল
আর কয়েক গন্ডা হাতা তার উপর দিয়ে ঘুড়েফিরে চলে গেল অনার্থক
দিন ভর। কারো মনে হলো না এমন কি একটা দাগও কাটলো না কেউ এর উপরে
দিন শেষ হলো শুধু দীর্ঘনিঃশ্বাস, ঘড়ে ফেরার তাড়া আর মগজ ভর্তি না বলা কথা নিয়ে
সাদা কাগজটার পাশে, টেবিলের উপরে
আজ সারাটা দিন কিচ্ছু করা হলো না।
এখন কবিরা অনেক স্মার্ট- তারা ব্লগ লিখতে পারে
এখন কবিরা অনেক স্মার্ট
তারা আর আগের মতোন আত্নহত্যার কথা ভাবেন না
লেখার কাগজ নিয়ে তাদের ভাবতে হয় না, লেখার মাঝ পথে কলমের কালির সাথে লেখাগুলো আটকে যায় না, তারা আজকাল
কি-বোর্ড চেপে চেপে কবিতা লেখেন, চাবির পরে চাবি টিপে ভাবনাগুলো সাজিয়ে তোলেন
তারা যন্ত্রের ব্যাবহারে অভ্যাস্ত হয়ে উঠছেন
লেখার সাথে সাথে লেখাগুলো প্রকাশ করতে পারছেন (ব্লগে)
তাকে ঘুরতে হচ্ছে না সম্পদকের দুয়ারে দুয়ারে বোতল নিয়ে
আর প্রসব পরবর্তি অবসাদ - যা মূলত সদ্য জন্ম নেয়া কবিতা
আরেকজন কবির সাথে, পাঠকের সাথে শেয়ার করতে না পারার যন্ত্রণা থেকে
জন্ম নিত; এখন অনেক কমে যাচ্ছে। যেহেতু কবিরা চাবি টিপে মূহুর্তেই পৌছে যাচ্ছেন
আরেকজন কবির বাড়িতে
এখন তারা ইচ্ছা হলেই আরেকজন কবির জানালায় উকি দিয়ে দেখতে পারছেন
আজ তার রসুইয়ে কি পাক হচ্ছে - পদ্য নাকি গদ্য
নাকি আজ কবির কিচ্ছু ভালো লাগছে না, আজ তার উপবাস
আর তারা চাবি টিপে টিপে সাজিয়ে তুলছেন নিজের ভাবনা গুলো, দেখে নিচ্ছে মনিটরে
ভাবনাগুলো জমা করে রাখছেন যন্ত্রের স্মৃতিতে, ছড়িয়ে দিচ্ছেন বেতারে
আকাশে আকাশে
এখন কবিরা আত্না-হত্যার আগে সুইসাইড নোটের পরিবর্তে লাইভ ব্রডকাষ্ট করতে পারছেন মুহূর্তটাকে।
ইমরান মাঝি এবং সাদী তাঈফ এবং সাইফ কে মনে পড়লো অকারণে
পাখীরা পড়ে না, নানা বাড়ি যায় ছুটিতে
কষিটানা খাতাগুলো ফাঁকা পরে থাকে
অপেক্ষায়। জেলের সন্তান মজিদ মিঞা
ফোর পাশ করে রিক্সা চালায় তাই পাখীর
বাপ তাকে সাথে নিয়ে ইসকুলে যায়
উপবৃত্তির পয়শা তুলিতে।
সময় যাপন-১০
মাতম স্তব্ধ হলে লোবানের ঘ্রাণ
অলৌকিক আয়াতের সাথে
মিশে যায় গোরস্থানময়
আয়াতুল কুরশীর বাণী অচেনা লাগে
চৌদিকে চেয়ে দেখি প্রখর রোদ্দুর
ঈশ্বর প্রতিপক্ষ হলে প্রতিরোধ
সামান্যই সম্ভব
তবুও কেউ কেউ প্রতিবাদী হয়
ইসকুল পালিয়ে সিনেমা দ্যাখে।
তরিকা
মার্জিত এবং পরিবর্ধিত সংষ্করন
তরিকা একটা জটিল ব্যাপার
যেমন কর্ম একটা যোগ
যে যোগী সে পারে
কোরতে
বাইবেলে লুক বলেছেন
- যে করে সে বাড়ীর বাইরে যেতে ভয় পায় না
কারণ সে পাওয়ার যোগ্য।
পারা একটা কথাও বটে-
জটিল
এই দুনিয়ায় দুই তরিকার সাধক আছেন
জাহেরী আর বাতেনী
জাহেরী তরিকার সাধকগণ জাহের করেন
কারণ তারা পারেন
আর যারা বাতেনী তরিকার লোক
তারাও করেন ইচ্ছে হলে
কোরে গোপন করেন।
কলির এই দুনিয়ায় পারাটা একটা পাপ
যে পারে তাকে অন্যের অনুরোধে
ঘুরেফিরে একই কাজ
কোরতে হয়
বারবার
পারার অপরাধে
আর অনুরোধের ঢেকিতো একটা দারুণ ব্যাপার
মানুষকে দিয়ে তার অপ্রিয় কাজগুলো করিয়ে নিতে পারে
তাই বাতেনী তরিকার সাধুগণ
পারতপক্ষে করেন না,
কোরলেও গোপন করেন।।
আমি ভাই অলস মানুষ, তরিকাছাড়া উলুরবনে
ভাবতে ভাবতে দিন কেটে যায়
কোরবো কখন...
অনেক দিনের অনেক দিন পরে
অনেক দিনের অনেক দিন পরে
আজ বৃষ্টি হচ্ছে
গোঁ গোঁ শব্দ তুলে একটা ট্রাক
আসছে আমার দিকে ছুটে
আকাশে ডাকছে আমাকে মেঘ
আমি তোমাকে একটা গল্প লিখছি
আজ
অনেক দিনের অনেক দিন পরে।
নষ্টলজিক বিকেলে চায়ের কাপে-২
কিশোরের চোখ দেখে ফ্যালে ফুল
ফুলের ভেতরে ছিল নদী
আহা নদীটাকে দ্যাখা যেত যদি!
সাদা সাদা মেঘ উড়ে উড়ে যায়, হাওয়ার ইচ্ছায়
মাঝে মাঝে ঝড়ে পড়ে বৃষ্টি হয়ে টাপুর টুপুর
নড়েচড়ে বুকের ভেতরে আগুনের নদী
আহা নদীটাকে দ্যাখা যেত যদি!
বুকের ভেতরে ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে জাগে
বিকেলের ভোর
আর একা একা থাকে যে কিশোর
যুবক বয়সে, তাকে কি বলা যাবে এই বেলা
একর অধিক সমিল মৌলিক-
সেতো পৃথিবীতে নেই।
অনেক দিনের অনেক দিন পরে
অনেক দিনের অনেক দিন পরে
আজ বৃষ্টি হচ্ছে
গোঁ গোঁ শব্দ তুলে একটা ট্রাক
আসছে আমার দিকে ছুটে
আকাশে ডাকছে আমাকে মেঘ
আমি তোমাকে একটা গল্প লিখছি
আজ
অনেক দিনের অনেক দিন পরে।
নীল নির্বাণের গল্প এবং আমার দর্শন-চিন্তার সাথে দুইটা ছবি
নীল নির্বাণের গল্প
আমার ছেলে নীল নির্বাণ এর বয়স ২ বছর ৮ মাস। নীল নির্বান এইটুকু বয়সেই বেশ গল্পো বানানো শিখে ফেলেছে (যে যুগ-জামানা পরছে না শিখে উপায় আছে !!!)। তো আজ সকালে ও আমাকে ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাক্যে (আমার বলা ইংরেজী বাক্যের চেয়ে ওর ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাক্যে ভালো কাজ চলে- মূল বিষয় বোঝাতে)। গল্পোটা হুবুহু তুলে দিলাম ৎ
কাল আমরা যখন পুকুর পারে গেছিলাম তখন একটা হাম্বা হাটতে হাটতে পানিতে পরে গেছিল। তখন পুকুরের সব পানি রাস্তায় চলে আসছিল। মাছরাও রাস্তায় চলে আসছিল, লাফাচ্ছিল। তখন একটা ম্যাও আছেনা, কালো ম্যাও এসে সব মাছ খায়ে ফেলছে। তারপর না ম্যাওটার গলায় একটা কাঁটা ফুটে গ্যাছে।
নীল নির্বাণ মায়ের সাথে নাটক করছে
আমার দর্শন-চিন্তা-০১
জ্ঞানীরা বলেন দর্শনশুন্য জীবন হয়না। প্রত্যেকটি জীবনেরই বেঁচে থাকার জন্যে একটা দর্শনের প্রয়োজন - যেইটার নাম জীবন-দর্শন।একটা সুনির্দিষ্ট জীবন-দর্শন থাকলে জীবনটা যাপন করা সহজ হয়। জীব ভেদে জীবন-দর্শনের ভেতরে ভিন্নতা থাকে, তবে মানুষ বাদে আর সব অন্যান্য জীবনগোষ্ঠির জীবন-দর্শন মোটামুটি একটাই -জীবনের জগতে টিকে থাকা ( আমি পশু-পক্ষী-গাছদের সাথে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এই সত্য আবিষ্কার করেছি ! )। তবে এখন জীবনজগতের একটা বড় অংশের টিকে থাকা না থাকার বিষয়টা মানুষ নামক জীবের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পরেছে। এখানে জীবনজগতের এই অংশের কারোরই জন্ম-মৃত্যু-টিকে থাকার জন্যে নিজেদের কিছু করতে হয়না-করার প্রয়োজন পরে না-করার সুযোগটাই নেই।তাদের জন্মটা পর্যন্ত হয় মানুষের তত্বাবধানে (খামারে), ফলে তাদের জীবন হয়ে পরেছে দর্শন-শুন্য, ফলত উদ্দেশ্যবিহীন।অবশ্য মানুষের মধ্যে বড়ো অংশটাও এখন এই সব অন্যান্য জীবনের মতোনই কোন সুনির্দিষ্ট জীবন-দর্শন ছাড়াই জীবনটা পার করে দিচ্ছে - একটা ছোট্ট গোষ্ঠির (এরাও মানুষ) জীবন-দর্শন বাস্তবায়নের নিমিত্তে বিবিধ প্রয়োজন মেটাচ্ছে।
কাফফারা ঃ যেহেতু কাজ-কাম নাই, তাই হাবিজাবি উদ্ভট কথাবার্তা লিখছি। যেহেতু এই পোষ্টের দ্বারা আপনার ভেতরে বিরক্তি উৎপাদন করেছি , কাফফারা স্বরূপ কলাবতী ফুলের একটা অল্প নবীন এবং একটা অধিক নবীন পাতার আর একথোকা লাল টুকটুকে কলাবতি ফুলের ছবি জুরে দিলাম - সবুজ দেইখা মেজাজ শরীফ ঠান্ডা করেন।
কলাবতী ফুলগাছের নবীন পাতা
কলাবতী ফুল
আমি তোকে ভালবাসতে চাই, আমি তোর কাছে আসতে চাই
আমি তোকে ভালবাসতে চাই, আমি তোর কাছে আসতে চাই জাতীয় কবিতা/গান লিখতে মন চাচ্ছে।
লিখেই ফেলা উচিত....আপনেরা কি বলেন? নাহলে আবার অসুখ-বিসুখ হইতে পারে!!!!
বেচারামের বাবা আত্মারাম ইহধাম ত্যাগ করার পরে বলাই চিন্তি কে নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা
বলাই চিন্তি কে নিয়ে বেচারাম খুব চিন্তায় ছিল। বেচারামরা পেশায় ধোপা। এইটা তাদের পূর্বতন চৌদ্দপুরুষের পেশা।বংশ পরম্পরা অনুশারে তাদের বংশে কারো জন্ম হলে সেও পিতা-পিতামহের পেশাকে জীবিকা হিসেবে গ্রহণ করবে এইটাই ছিল রীতি। জীবিকাটা এখানে মুখ্য বিষয় নয়, পরম্পরাটাই আসল। ধোপার সন্তান ধোপা না হয়ে অন্য কিছু হতে পারে - এই বোধটাই তাদের বংশের কারো মধ্যে ছিল না, কেউ এ রকম চিন্তা করার দুঃসাহসও করতো না অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভয়ে। তারচেয়ে পৈত্রিক পেশায় ঢুকে নিরাপদে জীবনটা পার করে দেওয়াটাই সহজ ও স্বাভাবিক ছিল। তাছাড়া বাপ-দাদার পেশায় না ঢুকে অন্য কোন পেশায় ঢুকে জীবিকা নির্বাহ করা যায় সেইটা ভেবে-চিন্তে বাইর করাও একটা মুশকিল ছিল। অবশ্য বেচারামদের আগে কারো এই রকম পাপ চিন্তার দরকারো হয় নাই। বেচারাম যখন কিশোর ঠিক সেই সময়ে তাদের চৌদ্দ পুরুষের পেশায় টিকে থাকা নিয়ে সত্যিকারের সংকট দেখা দিলো। তখন বেচারামের বাবা আত্মারাম মাত্র দেহ ত্যাগ করেছে। ইহধাম থেকে ইস্তফা নেওয়ার সময় আত্মারাম তার জেষ্ঠ্যপুত্রধন বেচারাম কে তার সবকিছু দিয়েথুয়ে গিয়েছিল। উত্তরাধিকার সূত্রে পিতাঠাকুরের কাছ থেকে বেচারাম একটা গাধা, কাপড় ধোয়ার মুগুর ও কাঠ, কাপড় গিলে করার জিনিসপত্র, তিনটা ছোটছোট ভাই, একটা বিধবা বোন, একটা বিধবা মা এবং একটা মাত্র নড়বড়ে ছাউনি দেয়া ঘড় পেয়েছিল। পিতা ঠাকুরের রেখে যাওয়া গাধাটাকে বেচারাম আদর করে বলাই চিন্তি নামে ডাকতো। এই নামটা তার কাকার দেয়া।
স্বর্গীয় আত্মারামের পুত্র বেচারামের গাধা বলাই চিন্তি
পিতা ঠাকুর ইহধাম থেকে প্রস্থানের কিছুদিন পরে বেচারাম যে ঘাটে কাপড় ধুইতো সেইঘাটটা কন্ট্রাকটারদের দখলে চলে গেল। কন্ট্রাকটাররা নাকি এই ঘাট সরকার বাহাদুরের কাছ থেকে বিল্ডিং বানানোর জন্যে বন্দোবস্থ নিয়েছিল। তো দখল নিয়েই কন্ট্রাকটারের পো'রা ঘাটের চারদিকে বেড়া দিয়ে মাটি ভরাট করে ঘাট বুজিয়ে বিল্ডিং এর কাজ শুরু করে দিলো। এ দিকে বেচারাম বেচারা পড়লো বড়োই ফাপরে - এখন সে কোথায় কাপড় ধোবে? আশে-পাশেতো আর কোন ঘাটও নাই, যে দু'চাইরটা পুকুর আছে সেখানেও মাছ চাষ হয়, কাপড় কাচা নিষেধ।এমনিতেই বেচারামের দিনকাল খারাপ যাচ্ছিল, সে আর আগের মতোন কাপড় পাচ্ছিল না, কাচার জন্যে। যেদিন থেকে ভদ্রলোকের ছেলেরা লন্ড্রি খুলে বসেছে সেদিন থেকেই তার গ্রাহকের আকাল দেখা দিয়েছিল। চক্ষু লজ্জার খাতিরে যেসব পুরাতন গ্রাহক কাপড় কাচতে দিতো, গ্রাহকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বেচারাম চেয়েচিন্তে কয়টা কাপড় জোগার করতো ধোয়ার জন্যে, ঘাট দখল হবার পর থেকে সে তাদেরো হারালো।
এর ভেতরে আবার সেই ঘটনাটা আস্তে আস্তে ঘটতে আছিল, যার জন্যে বেচারাম বলাই চিন্তি কে নিয়ে চিন্তায় পরলো, যেই ঘটনাটা বলার জন্যে এই গল্পটা বলা।
(বাকিটুকু পরের বসায় ভেবে চিন্তে লিখবো, এখন আর লিখতে পারছি না, বলাই চিন্তি কেন্দ্রিক কোন ঘটনাটা ঘটানো যায় মাথায় আসছে না )
পাঠ প্রতিক্রিয়া
০০সম্পর্কের সুতোগুলো আজকাল সুইয়ের ছিদ্র খুঁজে পাচ্ছে না
বাধনের গ্রন্থিগুলো আলগা হয়ে যাচ্ছে, ভেসে যাচ্ছে হাওয়ায় হাওয়ায়
মায়া ও মমতারা , তবুও বেঁচে থাকা যাচ্ছে
সোনা-রূপা ছড়ানো বাতাস ইদানিং বেলুনে বন্দি; হাওয়ারা ভাসছে...
০২
মাথাভাঙ্গা নদী ভেঙ্গে একদা বয়ে গেছে নুহের নৌকা, এখন সেখানে বালুর চর পরে আছে
বিবাগী পুরুষেরা যেমন মাঝে মাঝে ঘরে ফিরে আসে স্মুতিতে কাতর হয়ে, খুঁজে ফেরে জলের দাগ, প্রেম ও প্রেমিকার মুখ।মাথাভাঙ্গা নদী ভেঙ্গে এইভাবে এখনো মাঝে মাঝে জলেরা আসে জোয়ারের মতো, সংসার খোঁজে, নাব্যতা না পেয়ে ফিরে যায়। বিবাগী পুরুষেরা সংসারী হয়না সুখ না পেয়ে আবার ফিরে ফিরে যায় জলের নৌকায় জল ঠেলে ঠেলে - বাহিরে।দুরে গেলে প্রেম বাড়ে বলে বিবাগী পুরুষ বারবার দুরে চলে যায় প্রেমের সন্ধানে সংসার ও পরিবার পেছনে ফেলে
মায়া ও মমতারা , তবুও বেঁচে থাকা যাচ্ছে
সোনা-রূপা ছড়ানো বাতাস ইদানিং বেলুনে বন্দি; হাওয়ারা ভাসছে...
০২
মাথাভাঙ্গা নদী ভেঙ্গে একদা বয়ে গেছে নুহের নৌকা, এখন সেখানে বালুর চর পরে আছে
বিবাগী পুরুষেরা যেমন মাঝে মাঝে ঘরে ফিরে আসে স্মুতিতে কাতর হয়ে, খুঁজে ফেরে জলের দাগ, প্রেম ও প্রেমিকার মুখ।মাথাভাঙ্গা নদী ভেঙ্গে এইভাবে এখনো মাঝে মাঝে জলেরা আসে জোয়ারের মতো, সংসার খোঁজে, নাব্যতা না পেয়ে ফিরে যায়। বিবাগী পুরুষেরা সংসারী হয়না সুখ না পেয়ে আবার ফিরে ফিরে যায় জলের নৌকায় জল ঠেলে ঠেলে - বাহিরে।দুরে গেলে প্রেম বাড়ে বলে বিবাগী পুরুষ বারবার দুরে চলে যায় প্রেমের সন্ধানে সংসার ও পরিবার পেছনে ফেলে
নোট
ঃ উপরের লেখা দু'টি আমার প্রিয় দুই ব্লগারের পোষ্ট পড়ে কমেন্ট হিসেবে
লিখেছিলাম। পরে ভালো লেগে গেল বলে অন্যদের সাথেও শেয়ার করলাম।
পোষ্টের হিট সংখ্যা বাড়ানোর একখান জবরদস্ত বুদ্ধি
যারা পোষ্টে হিট সংখ্যা বাড়াইতে সদা সর্বদা ব্যাকুল থাকেন, কিন্তু কোন এক আজিব বাধার কারণে (হইতে পারে পাবলিকে খায় না) হইয়া ওঠে না, তাদের জন্যে একটা অব্যার্থ ফর্মুলা (যে সব জ্ঞানী আগে থেইকা জানেন, তারা দয়া কইরা অফ যান, এই পোষ্ট আপনাদিগের জন্যে না)-
যে পোষ্টে হিট সংখ্যা বাড়াইতে চান সেই পোষ্টে ঢোকেন, তারপরে ব্রাউজারের রিফ্রেস বাটন ক্লিক করে রিফ্রেস করেন:D দেখেন একখানা হিট বাড়ছে:D
এখন যতবার খুশি এই প্রক্রিয়া চালাইতে থাকেন, প্রতিবার একটা করে হিট আপনার পরিসংখ্যানে যোগ হয়ে যাবে/#)
তো আর দেরি কেন? যারা হিট হইতে চান, মাইনষের পোষ্ট পড়া বাদ দিয়া হিট করতে থাকেন, নিজের পোষ্টে:P
যারা পোষ্টে হিট সংখ্যা বাড়াইতে সদা সর্বদা ব্যাকুল থাকেন, কিন্তু কোন এক আজিব বাধার কারণে (হইতে পারে পাবলিকে খায় না) হইয়া ওঠে না, তাদের জন্যে একটা অব্যার্থ ফর্মুলা (যে সব জ্ঞানী আগে থেইকা জানেন, তারা দয়া কইরা অফ যান, এই পোষ্ট আপনাদিগের জন্যে না)-
যে পোষ্টে হিট সংখ্যা বাড়াইতে চান সেই পোষ্টে ঢোকেন, তারপরে ব্রাউজারের রিফ্রেস বাটন ক্লিক করে রিফ্রেস করেন:D দেখেন একখানা হিট বাড়ছে:D
এখন যতবার খুশি এই প্রক্রিয়া চালাইতে থাকেন, প্রতিবার একটা করে হিট আপনার পরিসংখ্যানে যোগ হয়ে যাবে/#)
তো আর দেরি কেন? যারা হিট হইতে চান, মাইনষের পোষ্ট পড়া বাদ দিয়া হিট করতে থাকেন, নিজের পোষ্টে:P
ফেসবুক স্ট্যাটাস
একটা লাল পাখী কি যেন বলে যাচ্ছে নীল মানুষটিকে কানে কানে
যে ছিল তুষারে তৈরী - বরফের ভাই, যার কানে হেডফোন ছিল
যে শুনতে পায়না - আয়নার আর্তনাদ....
যে শুনতে পায়না - আয়নার আর্তনাদ....
টোলের টেক্সট
ডানদিকে সমুদ্র আর বামে পাহাড়উপরে মহাশুন্য আর পায়ের নিচে কংক্রিটকোনপথ নিরাপদ ভয়শুন্য
কোনপথ নিরাপদ পানিশুন্য
কোন উতরাই অনায়াস
কোন উড্ডিন বাস্তব অযান্ত্রিকে
নিচে মাটি হলে তবু ভেদ করা যেতো
এতো কংক্রিট- দুর্ভ্যেদ্য
তবে কোনপথ নিরাপদ গমনের...
ঘড় পুড়লে ছাই থাকে, কপাল পুড়লে কিচ্ছু থাকে না
কপালের আরেক নাম গোপাল
শুধু ভাগ্যবানদের ভালো হয়
(ভাগ্যবতিদের বাদ দিচ্ছি না, জেন্ডার বিতর্ক এড়াইতে ভাগ্যবান শব্দটাকে উভলিঙ্গ ধরছি)
এই আকালের দিনেও কতোজন কতোকিছু পাচ্ছে
কতোজনের কতোকিছু হচ্ছে
আইনের উর্ধ্বে উঠে
কতোজনের গতি হয়ে যাচ্ছে
স্পিড লিমিটের চেয়ে বেশি স্পিডে না গেলেই বরং
পুলিশে ধরছে
পুলিশকে ডিবি
ডিবি কে এনএসআই
মানুষ এখন ইচ্ছে হলেই
ডান থেকে বামে
বাম থেকে ডানে
যাইতে পারছে
কাম সারতে
(করিৎকর্মারা অবশ্য আগেও পারতো, যেমন ফররুখ-মাহমুদ)
কেউ আর কেচ্ছা-টেচ্ছা'র ধার ধারছে না
যখন আমি কপাল ঠুকছি বিদেশে যাইবো বলে
লাইন ধরছি গাধার মতোন, লাইনে
ও মমিন, দুবাইয়ে কিন্তু আগের মতোন কামাই-রুজি নাই!
তারচে পারলে বেয়াই হও ক্ষমতাবানের, ল্যাংরা-লুলার মতোন!
শেষ বিচারের দিন কামে লাগবো।
কর্ণেল কে কেউ চিঠি লেখে না
নিজেকে বেধে রেখেছি নিজেই - শিকলে।
বেশ লাগছে।
কেউ আমাকে খুঁজছে না।
আমার বাড়িতে কারো পা পড়ছে না।
কেউ কড়া নাড়ছে না অমার দড়জায়।
সকাল-সন্ধ্যা ব্যালকনিতে বসে আকাশ-কুশুম ভাবছি।
কেটে যাচ্ছে একেলা বিরহের বেলা...
আমার মন ভালো নেই
আমি অতীতে যা যা করেছি ভুল করেছি
আমি এখন যা যা করছি ভুল করছি
আমি ভবিষ্যতে যা যা করবো ভুল করবো।
আমার মন ভালো নেই।
রাইটার্স ব্লক চলছে।
কিছু পড়তেও ভালো লাগছে না।
খুব পুড়তে ইচ্ছে করছে জ্বরে।
বকুল ফুলের মালা গাথা মেয়েটি
বকুল ফুলের মালা গাথা মেয়েটিকে দেখতে গিয়েছিলাম
আজকেও ছিল বকুলের দিন; বকুল সময় - গন্ধে মাতাল
আজকেও আকাশে রোদ ছিল, ফুটপাথে রাস্তায়, শরীরে
ওদিকে আমার বউ ভাত নিয়ে বসে ছিল ঘরে
আমার অপেক্ষায় ভাদ্র দুপুরে, বকুলের দিনে, আর্দ্র গরমে।
নীল নির্বাণের নতুন গল্প এবং ফটোগ্রাফি; বোনাস হিসেবে মাহিরের মায়ের ফটোগ্রাফির চেষ্টা এবং বিবিধ প্রসঙ্গ
নীল নির্বাণের তিন নাম্বার গল্প
হঠাৎ করেই মাঝ রাতের পরে, আমি জেগেই ছিলাম, একটা বই পড়তে আছিলাম....আমার এক বছর নয় মাস বয়সের বাবা ঘুমের ভেতর থেকে এক ঝাকি দিয়ে জেগে উঠে, উঠে বসলো। বসেই চোখ খুলে আমার দিকে ঘুরে তার নতুন গল্পটা (এইটারে বোধ হয় গল্প না বলে স্বপ্ন বলা ভালো) শোনালো। ব্লগে তিন নাম্বার বলে নামকরণে তিন শব্দটা ব্যাবহার করলাম....নতুন গল্প সে প্রত্যেক দিনই শোনায় কয়েকটা করে......
স্বপ্নবৃত্তান্ত
বাবা জানো, কয়েকটা সাপ.....আমাকে......দৌড়াচ্ছিল......
আমি এক দৌড় দিয়ে খাটে উঠে পরছি.....
আমাকে ধরতে পারে নাই....
নীল বেশ ভালো ফটোগ্রাফি শিখে গেছে। আমি তার প্রতিভায় মুগ্ধ (সেইটা অবশ্য সব বাপই থাকে)। এখন সে নিজে নিজেই রীতিমতো ক্যামেরার কাভার খুলে ছবি তুলে বেড়াচ্ছে, একটা ছবি তোলার পরে আবার সেই স্ন্যাপটা সবাইকে দেখিয়ে (যদি তার নিজের পছন্দ হয়) তারপরে নিজেই আবার নতুন ছবি তোলার প্রস্তুতি নিয়ে (ভিউ থেকে শটে যাওয়া আরকি) নতুন ছবি তুলছে....প্রথম প্রথম সে ছবি তোলার সময় মোবাইলের মনিটর নিজের চোখের সাথে লাগিয়ে শাটার টিপতো....তাকে সেখাতে গেলে সে ধমক দিতো - তুমি উল্টা-পুল্টা বলতেছো !!!!!!!!!!তারপরে দ্রুতই তার উন্নতি হলো....দেড়-দুই সপ্তাহের মধ্যেই সে ঠিকঠাক ছবি তোলা শিখে ফেললো....রীতিমতো নিজে নিজেই ক্যামেরার কাভার খুলে (তার মোবাইলের ক্যামেরার আবার একটা শাটার-ঢাকনা আছে).......নিচে কিছু স্যাম্পল দিলাম -
ফ্যানের ছবি তোলা নীলের সবচে প্রিয়...সে প্রচুর ফ্যানের ছবি তোলে (সম্ভবত ভবিষ্যতে ফ্যানদের কথা ভেবে)......একটা ছবি তুলে ভিউ থেকে স্ন্যাপে যেতে গিয়ে গড়বড় করে ফেলছে....সেভ হইছে প্যানারোমা স্টাইলে
এইটা মনে হয় টিকটিকির ছবি (?)
নীলের তোলা মায়ের ব্লার-উল্টা ছবি...এক্সপেরিমেন্টাল
উপরের ছবিখান পছন্দ না হওয়ায় নীল তার মাকে একটা গাড়ী হাতে পোজ দিতে বাধ্য করছে - একটা ভালো ছবি তোলার জন্যে মায়ের
এইটা আমারে সবচে বেশি মুগ্ধ করছে - নীলের নিজের তোলা নিজের সেলফ পোট্রেট
ছেলের ছবি তোলার প্রতিভা দেখে এবং সেইটা নিয়ে আমার মাতামাতি দেখে (নিজের প্রিয় মোবাইলটা তাকে দিয়ে আমি এখন একটা পুরাতন ফোন ব্যাবহার করছি, যেইটাতে ক্যামেরাই নাই) ছেলের মায়ের খুব হিংসে হয়েছে....সেও নেমে পরেছে দেখলাম ফটোগ্রাফির চেষ্টায় (বোধ হয় ভেবেছে ভালো ছবি তোলা দেখলে তাকেও একটা ভালো ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল কিনে দেব).....ছেলের মোবাইল মাঝে-মধ্যে সেও দেখতে পাচ্ছি ধার নিয়ে ব্যবহার করছে ছবি তুলতে....
ধান বানতে শীবের গীত - একটা অপচেষ্টাশীবের গীত
দাদু সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি সন্ন্যাসী হবেন, সংসার ত্যাগ করে তীর্থে তীর্থে ঘুরে জীবনের বাকিটা কাটিয়ে দেবেন। তো প্রথম সপ্তাহে দাদুর লোটা কেনা হলো, পরের সপ্তাহে তার কম্বল কেনা হলো, তার পরের সপ্তাহে তার লাঠি কেনা হলো....এভাবে তার সন্ন্যাসী হয়ে সংসার ত্যাগের প্রত্রিয়াটা মাসাধিক কাল ধরে চলতে আছিল। তো একদিন নাতী দাদুর জ্ঞান-কান্ড (নাকি কান্ডের জ্ঞান) দেখে ক্ষেপে উঠলো। দাদুর সাথে তর্কে মেতে উঠলো এভাবে কি সন্ন্যাসী হওয়া যায় নাকি বিষয়ে। দাদুও নাতীর বেয়াদপিতে রেগেমেগে বললে - জীবনের তিনকালের এই শেষ কালে এসে কি আমাকে তোর কাছ থেকে শিখতে হবে নাকি কিভাবে সন্ন্যাসী হতে হয়?
চিৎকার-চেচামেচি করে দাদু-নাতি ততোক্ষণে বাড়ির সবাই কে জড়ো করে ফেলেছে। এ রকম একটা উত্তেজনাকর মুহূর্তে নাতী একটানে পড়নের ধুতি-জামা খুলে ফেলে দিলো। তার বদলে একটা গামছা কোমরে পেচিয়ে পরে বউ কে পেন্নাম করে বলল - মা (!) আমি চললুম, আজ থেকে আমি সংসার ত্যাগ করে সন্ন্যাসব্রত নিলুম.......বলে সত্যি সত্যিই সে হাটা দিলো, সংসার ছেড়ে, সন্ন্যাসী হতে।****
ঢেকি পার দেওয়া পর্ব বা বারা-বানা পর্ব (বানানটা বাড়া-বানাও হইতে পারে, আমার সন্দেহ আছে )
মানুষ যখন খুব সন্দেহবাতিকগ্রস্থ হয়ে ওঠে তখন সে কিভাবে চিন্তা-ভাবনা করে? সন্দেহ বিষয়টা মানুষের জিনের সাথে প্রবাহিত হয়ে আসে বলে এর কোন প্রতিকার নাই। মনে হয় সব প্রাণীর ক্ষেত্রেই এইটা কম-বেশি প্রযোজ্য। মনে সন্দেহ নেই - এই রকম প্রাণী সম্ভবত দুনিয়াতে নেই। মানুষ মানুষ কে সন্দেহ করবে, মানুষ বাড়ির বেড়াল কে সন্দেহ করবে, বাড়ির ঘুলঘুলিতে বাসা বাধা চড়াই-দম্পতি মানুষ এবং বেড়াল কে সন্দেহ করবে, ছেলে বাপ কে সন্দেহ করবে, বাপ মেয়ে কে সন্দেহ করবে, বউ স্বামী কে সন্দেহ করবে, গৃহস্বামী গৃহের আশ্রিতদের সন্দেহ করবে......এই রকম বিবিধ বিষয়ে সন্দেহ সন্দেহ খেলা চলতেই থাকবে জীবন ভর। মৃত্যুকালেও মুক্তি মেলা ভার ! অনেকের নাকি শুনেছি এরকম সময়েই বেশি বেশি ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ আসে, ধর্মেও। যেহেতু শোনা কথা, প্রতক্ষ্য অভিজ্ঞতাটা হয় নাই তাই জোর দিয়ে বলছি না। এরকম একে অপরকে সন্দেহ করাটা স্বাভাবিক প্রাকৃতিক। বরং কেউ যদি নিজেকে সকল বিষয়ে সন্দেহমুক্ত ভাবে (ভাবলেও ক্ষতি নাই, তবে অনেকে এই বিষয়ে রীতিমতো ঘোষণা দিয়ে বসে) তাইলেই বিপদ। তারে নিয়ে আর সকলের মনে সন্দেহ জাগে। তো আমি এই রকম সুস্থ্য-সুন্দর সন্দেহের কথা বলছি না, সন্দেহ করাটা যখন একটা মানুষের বাতিকে পরিণত হয়, দুনিয়ার সবাইকে সে প্রতিপক্ষভাবে, সন্দেহ করে, কাছেপিঠে কেউ না থাকলে নিজেকে নিয়েই সন্দেহ করতে শুরু করে - তখন মানুষের চিন্তার গতি পথটা অনুশরণ করতে পারলে বেশ লাগে। সে কিভাবে চিন্তা ভাবনা করছে তা ধরতে পারলে আমি নিশ্চিত আপনে মজা নয় ভয় পাবেন।
পবিত্র মঙ্গলবার হযরত সকাল থেকেই এই অমূলক বিষয়টা নিয়ে ভাবতে আছে। ভাবলেও সমস্যা ছিল না, সে তার বিখ্যাত পদ্ধতিগত পন্থায় বিষয়টা নিয়ে এর মধ্যেই একটা অবজার্ভেশানের আয়োজন করে ফেলেছে। কাছের মানুষদের চিন্তার তাপটা, রাস্তাটা সহজেই অনেকখানি বোঝা যায় বলে সে তার কাছের মানুষদের নিয়েই এই সন্দেহবাতিকতা পর্যবেক্ষণটা শুরু করে দিয়েছে।
তার প্রথম শিকার হিসাবে নিজের বউ কে সে বেছে নিয়েছে। ২ নং মা, ৩ নং বাপ, ৪ নং ছোট ভাই। ছেলেকে সে তার প্রকল্প থেকে দয়া করে বাদ রেখেছে (যদিও সবকিছু কি চাইলেই যায়/হয়, যেমনটা চাওয়া হয়)। যেহেতু বউয়ের মনের অন্দি-সন্দি এই ক'বছরে তার বেশ আয়ত্তে এসে গেছে বলে তার মনে হয়েছে বলেই বউ কে সে তার পরীক্ষা ও নিরীক্ষার এক নং গিনিপিগ নির্বাচিত করেছে। বিষয়টা তুলনা মূলক নিরাপদ বলেও এইটা হইতে পারে - আমি নিশ্চিত নই, সন্দেহ আছে, এ বিষয়ে। যাই হোক এই সন্দেহবাতিক গবেষণা যদি খালি অবজার্ভেশানে বা পরীক্ষাতে সীমাবদ্ধ থাকতো তাইলে মনে হয় কোন সমস্যা হইতো না। কিন্তু এর সাথে যখন হযরত নীরিক্ষাকেও পেচিয়ে ফেলেছে তখন থেকেই প্যাচটা লাগতে শুরু করেছে।
নীরিক্ষার অংশ হিসেবে বুধবারে হযরত বাড়ির সবগুলান তালা বদলে ফেললো। মা-বউ বিষয়টা নিয়ে প্রশ্ন করলে সে আবজাব বলে পাশ কাটিয়ে গেল। তার উত্তরে বিষয়টা তার মা-বউয়ের কাছে পরিষ্কার না হয়ে আরো জটিল হলো। এভাবে হযরত তাদের মনে সন্দেহবাতিক পর্যবেক্ষণ প্রকল্পে'র প্রথম সন্দেহটা ঢোকালো।
এর পরের দিন সে হঠাৎ করেই অনেক দিন পরে লোকজন লাগিয়ে চিলেকোঠার ঘরটা পরিষ্কার করায়ে নতুন রং করালো। পবিত্র শুত্রবারে বাড়িতে একটা স্টিলের ভল্ট (ব্যাংকে,সোনার দোকানে যে রকম থাকে) নিয়ে কয়েকজন হাজির হলে হযরত তাদের নির্দেশনা দিয়ে চিলেকোঠার ঘরে ভল্টটাকে বসালো। শুক্রবার বলে সবাই (বাপ-মা-বউ-বাচ্চা-ছোট ভাই) বাড়িতেই ছিল। বাড়িতে হঠাৎ এই রকম লোহার ভল্টের কি দরকার পরলো দেখতে সবাই ছাদে হাজির হলো। সকলে দেখলো এই ভল্টটাও রীতিমতো একটা দর্শর্নীয় মাল। চাবি দিয়ে খোলার পরেও সেখানে ডিজিট ঘুরিয়ে পাসওয়ার্ড লক করতে হয়। তো সবাই যতোক্ষণে ছাদে আসলো ততক্ষণে হযরত চিলেকোঠার ঘরে নতুন আমদানী ভল্টটা স্থাপন শেষ করে বের হয়ে আসছিল।
সবাই কে একবার ভল্টটা নেড়েচেড়ে দেখার সুযোগ দিয়ে সে সবাইকে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে নতুন কেনা একটা তালা সেই ঘড়ে লাগিয়ে সবাইকে অনুরোধ করলো ছাদে এই ভল্ট নিয়ে তারা যেন বাইরে কাউকে কিছু না বলে এবং আপাতত কয়েকদিন যেন চিলেকোঠার ঘড়ে কেউ না আসে। সবার একগাদা প্রশ্নের জবাবে হযরত হাতজোড় করে অনুরোধ করলো তোমরা এই বিষয়ে এখন আর আমারে কোন প্রশ্ন করো না, সব কিছু এখন আমি ঠিক বুঝিয়ে বলতে পারবো না, সময় নাই। আজকেই আমাকে এক্ষুণি বাগেরহাটে ছুটতে হবে একটা অফিসের কাজে।
বাড়ির সবাই মোটামুটি হযরতের শুক্রবারে বাগেরহাট যাওয়ার বিষয়টা জানতো বলে তাকে আপাতত ক্ষমা করে দিলো। চিলে কোঠার ঘরে নতুন কেনা তালা লাগিয়ে ছাদে নতুন কেনা তালা লাগিয়ে সবাইকে নিয়ে নিচে নেমে তরিঘড়ি করে বড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। যাওয়ার আগে সমুদয় তালার চাবি নাম্বার দিয়ে ঠিকঠাকমতো এক সেট মাকে এক সেট বউ কে বুঝিয়ে দিয়ে গেল। তবে ভল্টের চাবিটা (দেখতে মোটেও চাবির মতোন না) শুধু বউকে দিয়ে বললো - এইটা খুব সাবধানে রাখবা আর খবরদার এইটা দিয়ে আবার যেন ভল্টটা খুলতে যেও না। এই চাবি ঢুকিয়ে ঠিকঠাকমতো পাসওয়ার্ড না দিলে কিন্তুক ভল্টের তালা জন্মের লক হয়ে যাবে আবার খোলা একটা বিরাট ঝামেলার ব্যাপার হবে। আর ভুল পাসওয়ার্ড দিয়ে খুলতে গেলে মহা গ্যাঞ্জাম বেধে যাবে। এখন এতো বুঝিয়ে বলার সময় নাই। তুমি পারলে আমি না আসা পর্যন্ত ভল্ট-টল্টতো দুরের কথা চিলেকোঠাও খুলতেই যেও না। বলে সে ভল্টখানার চাবি হতে নিয়ে ছাদে গিয়ে চিলেকোঠায় একা কিছু সময় কাটিয়ে ৭ দিনের ট্যুরে বাগের হাটে চলে গেল।
(প্রথম অধ্যায় শেষ)
এতোক্ষণ যা ভানলাম
এতোক্ষণ যা করলাম সেইটার নাম বাল ছেড়া(অশ্লীল শব্দ প্রয়োগ করায় পাঠক ক্ষমা করবেন)। আমি আসলে বুঝতে চাইতেছি প্রফেশনাল লেখকরা কিভাবে লেখে - অর্ডার নিয়ে মাল সাপ্লাই দেয়। তো এইবারের মতোন কয়েকবার বুঝতে গিয়ে আসলে আমি নাজেহাল। শালার এইটা একটা কাম নাকি? মাটি কাটা/রিক্সা চালানোওতো এরচে সহজ। এইভাবে পৃষ্ঠার পরে পৃষ্ঠা গল্প বানিয়ে লিখে যাওয়া, আবার সেইটারে কাটাছেড়া করা, পছন্দ না হইলে রীতিমতো ৫/১০ পৃষ্ঠা ডিলিট মারা (যেহেতু হার্ডড্রাইভ ছেড়ার ব্যাবস্থা নাই, থাকলে মন্দ হতো না....ছেড়ার মজাটা (কাজটা) আসলে ডিলিট মেরে পাওয়া যায় না), আবার লেখা...কন্টিনিউয়েশান ঠিকঠাক রাখা....একটা লেখার গোয়ায় টানা ৫/৭/১০ দিন একমাস/একবছর/একযুগ সময় দেয়া - এইটাও কি সম্ভব? ক্যামনে?
এরচে আমার কবিতাই ভালো - নাজিল হলে নামায়ে ফেলি ঝামেলা নাই....নাজিল না হলেও অর্ডার থাকলে বা ইচ্ছে হলেই বানিয়ে ফেলি (মুক্তি মন্ডল স্টাইলে - মুক্তি'দা সরি ডোন্ট মাইন্ড, ব্লগে আপনে ছাড়া কবিতা নির্মাণের যোগ্য লোক পাই না), শব্দের পরে শব্দ....মাত্র কয়েক লাইন বড়োজোড় কয়েক পৃষ্ঠা.....কি চমৎকার!!! মাঝেমধ্যে অবশ্য দু'য়েকটা কবিতা যে ঝামেলা করে না তা বলছি না, নাজেলের সময় রিসিভার বা ওয়েদার বা সার্ভার সমস্যা করলে দু'য়েকটা শব্দ মিসিং হয়ে গেলে সেইটা আর মেলানো/বানানো যায় না, একটা গোঁজ-টোজ দিয়ে হয়ত কাজ চালিয়ে নেওয়া যায়, কিন্তু যতোক্ষণ/যতোদিন আবার সেই কবিতাটার সেই শব্দটাই সার্ভারে সার্চ দিয়ে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না, ততো দিনে মুক্তি নাই.....সেই কবিতাটা/লাইনটা/শব্দটা থেকে....এরকম নাকি কবিরা ভোগে (শোনা/দেখা কথা) মাঝে মধ্যে....কিন্তুক সেইখানেও এতো ঝামেলা নাই......ভুল বললাম কষ্টটা নাই.....আর কবিতা লিখে পেট চলে না বলে লেখা না হলেও দিনের পরে দিন না লিখেও পার করে দেওয়া যায় দিব্যি হাতি ঘোড়া মেরে.....কিন্তু যারা প্রফেশনাল রাইটার তারা কিভাবে কাজ করে কয়েকবারের মতো আবার একবার বোঝার চেষ্টা করে ভয় পাচ্ছি..........এইভাবে কি আসলে হয়? হয়তো মনে হয়....অনেকেইতো করেছে, অনেকেই করছে......অনেকেই করবে সামনেও.....
আবার বিগের (ব্যারা) উঠলে এই গল্পের প্লটটা নিয়ে বা অন্য কোন গল্পের প্লট নিয়ে চেষ্টা করে দেখবো....কিভাবে হয়....হয়ে ওঠে....বড়গল্প.....
অফটপিক ঃ এ্যবসার্ড টাইপের একটা প্লট নিয়ে উপরের মতোন একটা গল্পের সূত্র (প্যানডোরার বাকসো টাইপ) আমারে অনেক বছর জালাচ্ছে.....আমার অনেক না লেখা গল্পের মতো....তবে এইটা সবচে বেশি জ্বালায়.....এই জ্বালায়তো আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থের নামটাই প্যানডোরারার বকসো রাখছিলাম!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
****শুরুর গল্পটা বোদহয় শিবরামে পড়ছিলাম, শিওর না শিবরাম নাকি সঞ্জিব.....স্মৃতি থেকে নিজের মতোন বানায়ে দিলাম........পোষ্টটা কিন্তু আসলে শীবের গীত পর্বেই শেষ হয়ে গেছে!!!!!!!!!!!!!!!!তারপর থেকে মাটি কাটছি, সারাদিন কাইটা দেখি আরো অন্তত ১০/১৫ দিন লাগবো (তাও যদি মুড ভালো থাকে)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন