বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১১

সংকলন



আফিংখোরের সাক্ষ্য / বন্দে আলী মিয়া





চৌধুরীদের পুকুরের পাড়ে ছিলো হোথা পাড়ো ঘর


দেয়ালের মাটি খসে গেছে তার—চালেতে নাইকো খড়।


বাঁশ বাগানের ছায়াতে হেথায় আঁধার হইয়া রয়


দস্যি ছেলেরা দিনের বেলায় যেতে হোথা পায় ভয়।


সেই ঘরে নাকি পাড়ার যতেক আফিংখোরের দল


সন্ধ্যা লাগিতে জড়ো হয়ে সবে করে মহা কোলাহল।


কেউ টানে গাঁজা—কেহ বা আফিং—চণ্ডু চরস কেহ


বুঁদ হয়ে শেষে মাটির পরেই দেয় এলাইয়া দেহ।


আফিংখোরেরা বহু রাত ধরি থাকে সেই আড্ডায়


ভাঙ খায় আর বাক্স বাজিয়ে মাথা নেড়ে গান গায়


মনের সুখেতে আছে যত নেশাখোর—


হঠাৎ একটা অঘটন ঘটি বিপদ হইল ঘোর।


মফিজ ওদের দলের স্যাঙাত হঠাৎ হয়েছে খুন


খবর শুনিয়া ভয়ে সবাকার মুখটি হইল চুন।


পরদিন সেথা পুলিশ আসিয়া তল্লাশ করি ঘর


সবারে বাঁধিয়া থানার হাজতে নিয়ে গেল সরাসর।


জাহিদ ওদের দলের প্রধান—অতি চালভারী লোক


তোবড়ানো গাল—শির উঁচু গলা—রাঙা ঢুলু ঢুলু চোখ।






বিচারের দিন তারে নিয়ে গেল হাকিমের এজলাসে


কী বলিতে হায় কিবা সে বলিবে—জিভ শুকাইয়া আসে।


হাকিম সুধায়: তোমরা তো সবে একসাথে নেশা টানো—


মফিজেরে কেবা করিয়াছে খুন বলো তুমি যাহা জানো?


জাহিদ কহিল: করেছে কে খুন এ কথা কেমনে বলি!


রোজ সন্ধ্যায় আড্ডায় এসে নেশা করে যেতো চলি।


শুধু সেইটুকু জানা শোনা ছিলো—ইহার অধিক নয়—


খুন দেখি নাই—কেমনে দেখিব! কথা শুনে পাই ভয়।


হাকিম তাহারে জিজ্ঞাসা করে: শোনো তবে পুনরায়


মরেছে যে রাতে সেই রাতে কিগো গেছিলো সে আড্ডায়?


জাহিদ কহিল: মফিজের লেগে চোখে আসে আজ বারি


গোটা কুড়ি টাকা নিয়েছিনু কবে এখনো সে টাকা ধারি।


তার দেনা আর শোধ হলো নাকো—ধর্মাবতার শোনো


টাকাগুলি তার পৌঁছে দেবার করো গো উপায় কোনো।


হাকিম কহিল: বাজে কথা তব কোর্ট না শুনিতে চায়


যেই দিন রাতে হয়েছিলো খুন—সে রাতে দেখেছো তায়?


জাহিদ কহিল: দেখিয়াছি বটে—আড্ডায় গিয়েছিলো—


আমার গাঁজার কল্কি কাড়িয়া খুব কষে টেনেছিলো।


মাথা ছিলো কিবা গলাকাটা হয়ে গিয়েছিলো সেই রাতে


মনে নাই কিছু—বলছি সত্য আপনার সাক্ষাতে।






সাক্ষ্য শুনিয়া হাকিম অবাক—কোর্টের লোকেরা কয়


আফিংখোরের কথা এ নহিলে এতখানি ঠিক হয়।


এমন সরল—দেখিয়াছে যাহা বলিয়াছে অকপটে


লোক দেখিয়াছে মাথা দেখে নাই—ভাবিবার কথা বটে।




কাহিনী ও কথিকা; প্রথম সংস্করণ জানুয়ারি ১৯৭১; প্রকাশক: সোসাইটি ফর পাকিস্তান স্টাডিজ ঢাকা।


হিংসুটেদের গান

আমরা ভালো লক্ষী সবাই, তোমরা ভারি বিশ্রী,তোমরা খাবে নিমের পাঁচন, আমরা খাবো মিশ্রি।
আমরা পাব খেলনা পুতুল, আমরা পাব চমচম,
তোমরা ত তা পাচ্ছ না কেউ, পেলেও পাবে কমকম।
আমরা শোব খাট্ পালঙে মায়ের কাছে ঘেষটে,
তোমরা শোবে অন্ধকারে একলা ভয়ে ভেস্তে।
আমরা যাব জামতাড়াতে চড়ব কেমন ট্রেইনে,
চেচাঁও যদি 'সঙ্গে নে যাও' বলবো 'কলা এই নে'!
আমরা ফিরি বুক ফুলিয়ে রঙিন জুতোয় মচমচ্
তোমরা হাঁদা নোংরা ছিছি হ্যাংলা নাকে ফচফচ্।
আমরা পরি রেশমী জরি, আমরা পরি গয়না,
তোমরা সেসব পাওনা বলে তাও তোমাদের সয় না।
আমরা হব লাটমেজাজী, তোমরা হবে কিপটে,
চাইবে যদি কিচ্ছু তখন ধরবো গলা চিপটে।


মলয় রায়চৌধুরী'র কবিতা

প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার


(এই কবিতাটি অশ্লীলতার দায়ে অভিযুক্ত এবং নিম্ন আদালতে দণ্ডিত হয়েছিল | উচ্চ আদালতে এই রায়
নাকচ হয়ে যায়, ২৬ জুলাই ১৯৬৭)


ওঃ মরে যাব মরে যাব মরে যাব
আমার চামড়ার লহমা জ্বলে যাচ্ছে অকাট্য তুরুপে
আমি কী কোর্বো কোথায় যাব ওঃ কিছুই ভাল্লাগছে না
সাহিত্য-ফাহিত্য লাথি মেরে চলে যাব শুভা
শুভা আমাকে তোমার তর্মুজ-আঙরাখার ভেতরে চলে যেতে দাও
চুর্মার অন্ধকারে জাফ্রান মশারির আলুলায়িত ছায়ায়
সমস্ত নোঙর তুলে নেবার পর শেষ নোঙর আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে
আর আমি পার্ছিনা, অজস্র কাঁচ ভেঙে যাচ্ছে কর্টেক্সে
আমি যানি শুভা, যোনি মেলে ধরো, শান্তি দাও
প্রতিটি শিরা অশ্রুস্রোত বয়ে নিয়ে যাচ্ছে হৃদয়াভিগর্ভে
শাশ্বত অসুস্থতায় পচে যাচ্ছে মগজের সংক্রামক স্ফুলিঙ্গ
মা, তুমি আমায় কঙ্কালরূপে ভূমিষ্ঠ করলে না কেন ?
তাহলে আমি দুকোটি আলোকবর্ষ ঈশ্বরের পোঁদে চুমু খেতুম
কিন্তু কিছুই ভালো লাগে না আমার কিছুই ভালো লাগছে না
একাধিক চুমো খেলে আমার গা গুলোয়
ধর্ষণকালে নারীকে ভুলে গিয়ে শিল্পে ফিরে এসেছি কতদিন
কবিতার আদিত্যবর্ণা মুত্রাশয়ে
এসব কী হচ্ছে জানি না তবু বুকের মধ্যে ঘটে যাচ্ছে অহরহ
সব ভেঙে চুরমার করে দেব শালা
ছিন্নভিন্ন করে দেব তোমাদের পাঁজরাবদ্ধ উত্সব
শুভাকে হিঁচড়ে উঠিয়ে নিয়ে যাব আমার ক্ষুধায়
দিতেই হবে শুভাকে
ওঃ মলয়
কোল্কাতাকে আর্দ্র ও পিচ্ছিল বরাঙ্গের মিছিল মনে হচ্ছে আজ
কিন্তু আমাকে নিয়ে কী কোর্বো বুঝতে পার্ছিনা
আমার স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে
আমাকে মৃত্যুর দিকে যেতে দাও একা
আমাকে ধর্ষণ ও মরে যাওয়া শিখে নিতে হয়নি
প্রস্রাবের পর শেষ ফোঁটা ঝাড়ার দায়িত্ব আমায় শিখতে হয়নি
অন্ধকারে শুভার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়া শিখতে হয়নি
শিখতে হয়নি নন্দিতার বুকের ওপর শুয়ে ফরাসি চামড়ার ব্যবহার
অথচ আমি চেয়েছিলুম আলেয়ার নতুন জবার মতো যোনির সুস্থতা
যোনিকেশরে কাঁচের টুকরোর মতো ঘামের সুস্থতা
আজ আমি মগজের শরণাপন্ন বিপর্যয়ের দিকে চলে এলুম
আমি বুঝতে পার্ছিনা কী জন্য আমি বেঁচে থাকতে চাইছি
আমার পূর্বপুরুষ লম্পট সাবর্ণ চৌধুরীদের কথা আমি ভাবছি
আমাকে নতুন ও ভিন্নতর কিছু কোর্তে হবে
শুভার স্তনের ত্বকের মতো বিছানায় শেষবার ঘুমোতে দাও আমাকে
জন্মমুহুর্তের তীব্রচ্ছটা সূর্যজখম মনে পড়ছে
আমি আমার নিজের মৃত্যু দেখে যেতে চাই
মলয় রায়চৌধুরীর প্রয়োজন পৃথিবীর ছিল না
তোমার তীব্র রূপালি য়ুটেরাসে ঘুমোতে দাও কিছুকাল শুভা
শান্তি দাও, শুভা শান্তি দাও
তোমার ঋতুস্রাবে ধুয়ে যেতে দাও আমার পাততাড়িত কঙ্কাল
আমাকে তোমার গর্ভে আমারি শুক্র থেক জন্ম নিতে দাও
আমার বাবা-মা অন্য হলেও কি আমি এরকম হতুম ?
সম্পূর্ণ ভিন্ন এক শুক্র থেকে মলয় ওর্ফে আমি হতে পার্তুম ?
আমার বাবার অন্য নারীর গর্ভে ঢুকেও কি মলয় হতুম ?
শুভা না থাকলে আমি কি পেশাদার ভালোলোক হতুম মৃত ভায়ের
ওঃ বলুক কেউ এসবের জবাবদিহি করুক
শুভা, ওঃ শুভা
তোমার সেলোফেন সতিচ্ছদের মধ্যে দিয়ে পৃথিবীটা দেখতে দাও
পুনরায় সবুজ তোশকের উপর চলে এসো শুভা
যেমন ক্যাথোড রশ্মিকে তীক্ষ্ণধী চুম্বকের আঁচ মেরে তুলতে হয়
১৯৫৬ সালের সেই হেস্তনেস্তকারী চিঠি মনে পড়ছে
তখন ভাল্লুকের ছাল দিয়ে সাজানো হচ্ছিল তোমার ক্লিটোরিসের আশপাশ
পাঁজর নিকুচি-করা ঝুরি তখন তোমার স্তনে নামছে
হুঁশাহুঁশহীন গাফিলতির বর্ত্মে স্ফীত হয়ে উঠছে নির্বোধ আত্মীয়তা
আ আ আ আ আ আ আ আ আ আঃ
মরে যাব কিনা বুঝতে পার্ছিনা
তুল্কালাম হয়ে যাচ্ছে বুকের ভেতরকার সমগ্র অসহায়তায়
সব কিছু ভেঙে তছনছ করে দিয়ে যাব
শিল্পের জন্যে সক্কোলকে ভেঙে খান-খান করে দোব
কবিতার জন্য আত্মহত্যা ছাড়া স্বাভাবিকতা নেই
শুভা
আমাকে তোমরা ল্যাবিয়া ম্যাজোরার স্মরণাতীত অসংযমে প্রবেশ কোর্তে দাও
দুঃখহীন আয়াসের অসম্ভাব্যতায় যেতে দাও
বেসামাল হৃদয়বত্তার স্বর্ণসবুজে
কেন আমি হারিয়ে যাইনি আমার মায়ের যোনিবর্ত্মে
কেন আমি পিতার আত্মমৈথুনের পর তাঁ পেচেছাপে বয়ে যাইনি
কেন আমি রজঃস্রাবে মিশে যাইনি শ্লেষ্মায়
অথচ আমার নিচে চিত আধবোজা অবস্থায়
আরাম গ্রহণকারিনী শুভাকে দেখে ভীষণ কষ্ট হয়েছে আমার
এরকম অসহায় চেহারা ফুটিয়েও নারী বিশ্বাসঘাতিনী হয়
আজ মনে হয় নারী ও শিল্পের মতো বিশ্বাসঘাতিনী কিছু নেই
এখন আমার হিংস্র হৃৎপিণ্ড অসম্ভব মৃত্যুর দিকে যাচ্ছে
মাটি ফুঁড়ে জলের ঘূর্ণি আমার গলা ওব্দি উঠে আসছে
আমি মরে যাব
ওঃ এ সমস্ত কী ঘটছে আমার মধ্যে
আমি আমার হাত হাতের চেটো খুঁজে পাচ্ছি না
পায়জামার শুকিয়ে যাওয়া বীর্য থেকে ডানা মেলছে
৩০০০০০ শিশু উড়ে যাচ্ছে শুভার স্তনমণ্ডলীর দিকে
ঝাঁকে ঝাঁকে ছুঁচ ছুটে যাচ্ছে রক্ত থেকে কবিতায়
এখন আমার জেদি ঠ্যাঙের চোরাচালান সেঁদোতে চাইছে
হিপ্নোটিক শব্দরাজ্য থেকে ফাঁসানো মৃত্যুভেদী যৌন-পর্চুলায়
ঘরের প্রত্যেকটা দেয়ালে মার্মুখী আয়না লাগিয়ে আমি দেখছি
কয়েকটা ন্যাংটো মলয়কে ছেড়ে দিয়ে তার অপ্রতিষ্ঠ খেয়োখেয়ি


হাংরি বুলেটিন


গুগলের দস্তাবেজ অনসন্ধান করে খুজে পাওয়া কবিরের অনুলিপি - নিজেকে ভাগ্যবান অনূভব করছি


থাকুক চেতনা জাগ্রত, থাকুক |
কাকে ?
তোকে!!?
নয় ?
নিশ্চয়ই আমাকে!
থাকুক চেতনা জাগ্রত ;
থাকুক অনুভূতি, বোধ, তুলোর শরীর
মনির কোটরে সাপ, জাগ্রত থাকুক;
তারার দিকে লক্ষ্যভেদের তীর
অব্যর্থ ছোবল, রোদের শরীর,
অক্ষত থাকুক;
থাকুক চেতনা জাগ্রত,
থাকুক ।


শব্দ; ভেঙ্গে পড়ে কাঁচের মতো

বিলুপ্ত স্মৃতির ভেতর থেকে গেছে কাঁচ ভাঙ্গার শব্দ
শব্দ আয়নায় স্বশব্দ ঢেউ ওঠে
ভেঙ্গে পড়ে কাঁচের মতন
ঝনঝন শব্দের ঘোর ভরে দ্যায় মননের সাদাখাতা
আয়নায় তাকিয়ে দেখি কার যেন প্রতিবিম্ব
টুকরো টাকরা শব্দের জিগ্স পাজলে বিছিন্ন


’তুমি’’ একটি দ্বিপাক্ষীয় প্রশ্নবিদ্ধ শব্দ

তুমি ছিলে আমার সাথে
তাই ‘আমরা’
তুমি ছিলে তার সাথে
তাই ‘তোমরা’
তুমি বললে এই আমি দ্বিপাক্ষীক হলে
‘সে’ কেন দ্বিপাক্ষীয় হবেনা ?
ভেবে দেখলাম ;
প্রশ্নটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক এবং যৌক্তিক
তবু ‘তুমি’ আমার সাথে যতটা সম্পৃক্ত
‘সে’ তো তা নয় ।

মানুষ! একথা নির্দিধায় বলতে পারি

কথারা তো অন্তরালেই থাকে
শ্রবণ ছিল একটুকু গোপন
এই অনুভব খানিক ভবঘুরে
বিপনন ও বন্ধ ছিল তাই
মানুষ হচ্ছি বলছি নির্দিধায়



যদি পারো ফেলে দাও অর্থহীন শব্দের ভার

ভেঙ্গে যাওয়ার পরে
যা থাকে তা আবার ভেঙ্গে গেলে
তাকে কি বলে ?
ভেঙ্গে যাওয়ার ও পরে !
এ যদি ভাঙ্গায় হবে তবে কাকে
বলে গড়া ?
প্রায়গিক শব্দের খেলা ?
তবে কেন শুধু শুধু ওকে
আর অভিধানে রাখা
যদি পারো ফেলে দাও
অর্থহীন শব্দের ভার





ভাবছি কিছু টাকা কিনব

আমার কাছে কিছু শব্দ আছে
একেবারে আনকোরা
ভাবছি শব্দগুলো দিয়ে
কিছু টাকা কিনব |



এইভাবে নিজেকে খুঁজে দেখা আমার অন্তর্গত

কেউ এসেছিল ! কে ও কেন ?
এই অর্থবোধক প্রশ্ন আমাকে একটি সম্পর্কের কিনারায় নিয়ে যায়
ভাবতে থাকি কে ও কেন ?
যেহেতু আসা যাওয়ার রয়েছে নিজস্ব পরিচিতি;
তবু ভাবি কাউকে, কাউকে; চেহারা আর সম্পর্কের আদল
এইভাবে নিজেকে খুঁজে দেখা আমার অন্তর্গত ।
ভাবছি দূর থেকে দূরে দেখবো
কাছ থেকে দূরে, দূর থেকে কাছে
উলট পালট

আমরা তোমাকে বিয়ে করতে চাই!!!!

আমরা তোমার কাছে যাচ্ছি অনেকদিন ধরে
তুমি টের পাচ্ছনা;
আমরা অনেকের কাছে যাচ্ছি অনেকদিন ধরে
তুমি দেখতে পাচ্ছনা;
আমরা তোমাকে ভালবাসছি অনেকদিন ধরে
তুমি বুঝতে পারছনা;
আমরা অনেককে ভালবাসছি অনেকদিন ধরে
তুমি শুনতে পাচ্ছনা ;

একটি অনভ্যস্ত ণৈশ প্রক্ষেপণ !!!

এখন চলে আয়, এখনই চলে আয়, এরকম আহবান থেকে আমি পথে নামি
এখন পরিবেশ শান্ত ও স্থির, শহরে টহল দিচ্ছে জলপাই পোশাক, আমি যখন দুধের আলোর নিচে পৌঁছাই
তখন চারপাশটা প্রায় জনশূণ্য ; লাইব্রেরীর প্রলম্বিত অংশে চারজন তরুণ আমি সহ পাঁচে পরিণত হই , দুধেল আলোয় বিচ্ছুরিত ঊপাংশগুলি চারপাশটাকে বিম্বিত করছিল একথা ঠিক যে ঊপাংশরা প্রত্যাখ্যাত হয়নি এবং যথার্থ ভাবে বিম্বিত হয়েছিল | আমি আমার মুখভঙ্গি , পরিচ্ছদ ও শব্দের প্রয়োগে সন্তুষ্ট ছিলাম | সঠিক শব্দের অফুরন্ত সরবরাহ আমার উপস্থিতিকে প্রদর্শকের ভূমিকায় প্রতিষ্ঠা করে , আমাদের মধ্যে একটি নিঃশব্দ প্রতিযোগীতা শুরু হয়ে যায় আর আমরা দুধেল আলোর অতি বাস্তবতায় আরও খানিকটা কাছাকাছি হই, আমাদের বন্ধন পোক্ত হতে থাকে যদিও আমরা যথার্থ অর্থেই বন্ধু আর মানবিক সম্পর্কে আবদ্ধ শুধুমাত্র এই কারনেই আমি কিছুটা দূরে একাকী নির্জন স্থানে বসে থাকা একটি মেয়েকে বিরক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিই, সিদ্ধান্তটি আমার কাছে যথার্থ বলে প্রতীয়মাণ হয় |
জনশুন্যতার চিত্রটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে আর আমরা লাইব্রেরীর প্রলম্বিত জায়গাটি ছেড়ে দেবার প্রস্তুতি নিতে থাকি ; এরপর আমি ও আমার প্রজ্ঞাবান বন্ধুটি একটি ত্রিচক্রযানে উঠে পড়ি, রাস্তাঘাট শূণ্য , আর আমরা পথভ্রষ্ট ছিলাম না ; আমাদের গন্তব্য সুনির্দিষ্ট ছিল, আমাদের ত্রিচক্রযানের মাণবিক ইঞ্জিন সতস্ফুর্তভাবে আমাদের সহায়তা করছিল| প্রজ্ঞাবান বন্ধুটির বাড়িতে একজন অতিমানবের উপস্তিতি আমাদেরকে খানিকটা স্তিতিতর করে তোলে যদিও আমরা জানতাম যে এই অতিমানব আমাদেরকে খানিকটা মানসিক প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন , আমি ও আমার বন্ধুটি এই অতিমানবের শব্দবাণ থেকে নিজেদের রক্ষার্থে একটি মীমাংসায় উপনীত হই | আলাপচারিতা শেষ হলে তিনি আমাদেরকে একটি উন্নত আলোক প্রক্ষেপণের কৌশলী ছায়াছবির প্রস্তাব করেন | এতে আমরা একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাই ও মনোযোগী হই ; স্বল্প সময়েই আমরা কেন্দ্রীয় চরিত্রে অধিষ্টিত অতিমানবকে সনাক্ত করতে সমর্থ হই; প্রক্ষেপণটি যথেষ্ট জটিল আর কৌশলী হওয়ায় আমাদেরকে মনোযোগী হতে হয় এতে আমি নির্লিপ্ত আর নির্বাক হয়ে উঠি আর প্রকৃত বার্তা উপলব্ধিতে ব্যর্থ হই; একটা সময়ে আমরা সকলেই উপলব্ধি করি যে আমাদের বিচ্যূত হওয়ার সময় অভ্যাগত এমত আমরা বিচ্যূত হই বিচ্ছিন্ন হতে হতে পরিপূর্ণ বিযুক্ত হই এবং প্র্যাতহিক মৃত্যুর প্রস্তুতি নিতে থাকি|

কবির সম্পর্কে কবি'র নোট ঃ আহমেদুল হক কবির ( নাকি আহমেদুল কবির ? ) আমার বন্ধু - কবি... আমার এই ছোট্ট জীবনে অনেক মানুষ দেখেছি - ভালো কবিতা রচনা করতে পারে; কিন্তু প্রায় বিশুদ্ধ কবির জীবন যাপন করতে দেখেছি আমার সময়ের একজনকেই - আহমেদুল কবির কে - যার চিন্তা-ভাবনা পরিষ্কার এবং বৈজ্ঞানিক পন্থায় চালিত হয় - অবলিলায় !



০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৩:৩৮








A Dog Has Died

Pablo Neruda




My dog has died.
I buried him in the garden
next to a rusted old machine.


Some day I'll join him right there,
but now he's gone with his shaggy coat,
his bad manners and his cold nose,
and I, the materialist, who never believed
in any promised heaven in the sky
for any human being,
I believe in a heaven I'll never enter.
Yes, I believe in a heaven for all dogdom
where my dog waits for my arrival
waving his fan-like tail in friendship.


Ai, I'll not speak of sadness here on earth,
of having lost a companion
who was never servile.
His friendship for me, like that of a porcupine
withholding its authority,
was the friendship of a star, aloof,
with no more intimacy than was called for,
with no exaggerations:
he never climbed all over my
filling me full of his hair or his mange,
he never rubbed up against my knee
like other dogs obsessed with sex.


No, my dog used to gaze at me,
paying me the attention I need,
the attention required
to make a vain person like me understand
that, being a dog, he was wasting time,
but, with those eyes so much purer than mine,
he'd keep on gazing at me
with a look that reserved for me alone
all his sweet and shaggy life,
always near me, never troubling me,
and asking nothing.


Ai, how many times have I envied his tail
as we walked together on the shores of the sea
in the lonely winter of Isla Negra
where the wintering birds filled the sky
and my hairy dog was jumping about
full of the voltage of the sea's movement:
my wandering dog, sniffing away
with his golden tail held high,
face to face with the ocean's spray.


Joyful, joyful, joyful,
as only dogs know how to be happy
with only the autonomy
of their shameless spirit.


There are no good-byes for my dog who has died,
and we don't now and never did lie to each other.


So now he's gone and I buried him,
and that's all there is to it.






Translated, from the Spanish, by Alfred Yankauer

লোরকার কবিতা-কাঠুরিয়

আহ্ কাঠুরিয়া
আমার ছায়াটাকে
কেটে ফেলো তুমি
চৌদিকে আয়না সাজিয়ে
কেন জন্ম হলো আমার
নিজেকে নিয়ত দেখার এই অত্যাচার থেকে বাচাঁও, বাঁচাও আমাকে।




প্রিয় কার্টুন চরিত্রদের জন্ম ইতিহাস

টিনটিনের স্রষ্টা জর্জ রেমি (হার্জ)







বেলজিয়ামের আকিয়ে জর্জ রেমি দুর্দান্ত আঁকেন। তিনি ১৯২৬ সালে একটি দুঁদে গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টি করে তাকে নিয়ে কমিকস তৈরি করলেন। চরিত্রটির নাম দিলেন টোটর। তাকে নিয়ে ৪-৫টি কমিকস বইও বের হলো। কিন্তু ১৯২৯ সালে তিনি চরিত্রটিকে আরেকটু ঘষামাজা করে আরও আকর্ষণীয় করে তুললেন। আর নামও পাল্টে দিলেন। আর তাতেই আমরা পেলাম বিশ্বজোড়া খ্যাতিসম্পন্ন গোয়েন্দা টিনটিন।


নীল-সাদা সোয়েটার আর খয়েরি প্যান্টের এই ক্ষুদে সাংবাদিক ঘুরে বেড়ায় বিশ্ব জুড়ে। তার সঙ্গী হচ্ছে ছোট্ট কুকুর স্নোয়ি। কি, নামটা চিনতে পারলে না তো? চিনবে কি করে , তোমরা তো তাকে চেন কুট্টুস নামে। পৃথিবীর একমাত্র কথা বলিয়ে কুকুর।


টিনটিনের আরেক সঙ্গী হলেন ক্যাপ্টেন হ্যাডক। তিনি হচ্ছেন একজন অবসরপ্রাপ্ত মাতাল নাবিক। একটু বোকা আর বদমেজাজীও বটে। রেগে গেলে খুবই হাস্যকর গালাগালি করেন। এই যেমন টর্নেডো, টাইফুন, শুয়োপোকা, বিষফোঁড়া এইসব।


আরেকজন আছেন প্রফেসর ক্যালকুলাস। খুবই জ্ঞানী মানুষ। তবে কানে শোনেন কম। টিনটিন এদের নিয়ে , কখনোবা একা একাই বেরিয়ে পড়ে অভিযানে। টিনটিনের প্রতিটি কাহিনীতেই থাকে রহস্যভরা টানটান উত্তেজনা আর দুর্দান্ত অ্যাডভেঞ্চার। আর এর ফাঁকে মজার মজার ঘটনা তো আছেই। আর এই কারণে বিশ্বের অনেকদেশেই শিশু-কিশোরদের কাছে জনপ্রিয় কমিকস সিরিজ টিনটিন। এ পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ৩০টি ভাষায় টিনটিন প্রকাশিত হয়েছে।


রোমানদের আতঙ্ক অ্যাসটেরিক্স-অবেলিক্স



রোমান সাম্রাজ্য তখন সমগ্র ইউরোপ দখল করতে বসেছে। তাদের নেতৃত্বে আছেন জুলিয়াস সিজার। ইউরোপ দখল করা প্রায় শেষ, শুধু একটি ছোট গ্রাম দখল করা বাকি। সেটা হলো গলদের গ্রাম। গলেরা জাতি হিসেবে খুবই শান্তিপ্রিয়। খায়-দায়, গানবাজনা করে, জঙ্গলে শিকার করে বেড়ায়। তবে সমস্যা একটাই, সামনে রোমান সৈন্য পেলেই ইচ্ছেমত পেটায়। রোমানরা তাই ঐ গ্রামটাকে বেশ ভয় পায়। বিশেষ করে সেখানকার দুই বাসিন্দা, অ্যাসটেরিক্স আর অবেলিক্সকে।


অ্যাসটেরিক্স ছোটখাট মানুষ, তবে বেশ ভালো যোদ্ধা। আর জাদুর পানীয় খেলে তার শরীরে এসে যায় হাজার হাতির শক্তি, কেউই তাকে আর আটকাতে পারে না। অপরদিকে অবেলিক্স হচ্ছে বিশালদেহী এক পেটুক। আস্ত শুকর ফ্রাই সে এক লহমায় খেয়ে ফেলতে পারে। সে সারাক্ষণই সঙ্গে করে একটা অতিকায় পাথর নিয়ে বেড়ায়। যাকে পায় তাকেই শুভেচ্ছা জানিয়ে উপহার হিসেবে পাথরটা ধরিয়ে দেয়। আর রোমান সৈন্য পেলে তো ধরেই মার। অ্যাসটেরিক্সের মত তার জাদু পানীয় খেতে হয় না। ছোটকালে ভুলে সে একবার জাদু পানীয়ের পাত্রে পড়ে গিয়েছিল, সেই থেকে তার এমনিতেই অনেক শক্তি। এই দুজনের নানা মজার কান্ডকীর্তিকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে অ্যাস্টেরিক্স ও অবেলিক্স কমিকস সিরিজটি।


১৯৫৯ সালে ‘পিলোটি’ নামে ফ্রান্সের একটি ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়। সেটার প্রথম সংখ্যায় রেনে গসিনি নামের এক ভদ্রলোক ‘অ্যাসটেরিক্স’ নামের মজার চরিত্রটি প্রথম তৈরি করেন, আর সেটার ছবিগুলো এঁকে সেটাকে পুর্ণাঙ্গ কমিকসে পরিণত করেন ইউদারজো নামের আরেক নামী আর্টিস্ট। কিন' ১৯৭৭ সালে গসিনি মারা যাবার পর ইউদারজো একা একাই শুরু করলেন অ্যাসটেরিক্স-এর কাজ। এই দুজনের কলম ধরে অ্যাসটেরিক্স-অবেলিক্স ঘুরে বেরিয়েছে মিসর, আমেরিকা, ভারত, আফ্রিকাসহ পুরো ইউরোপ। মজার মজার কাণ্ডকীর্র্তি আর সংলাপে ভরপুর এই কমিকস কিন্তু ছেলে-বুড়ো সবারই মন জয় করেছে।


রিভারডেল হাইস্কুলের ছাত্র আর্চি





আর্চির পুরো নাম আর্চি অ্যান্ড্রুস। তার জন্ম ১৯৪১ সালে হলেও সবসময়ই তার বয়স ১৭ বছর। সে রিভারডেল নামের এক শহরে থাকে, পড়েও রিভারডেল হাইস্কুলে। তার দুই সহপাঠী বান্ধবী- ভেরোনিকা আর বেটি। এরা সবসময়ই নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে, সবসময়ই আর্চিকে দখলে রাখতে চায় ;) । দুজনের টানাটানিতে বেচারা আর্চির ত্রাহি মধূসুদন অবস্থা।


আর্চির আরেক বন্ধু আছে, সে হলো জাগহেড, বাংলা করলে এর মানে দাঁড়ায় যার মাথা জগের মত। কিন্তু জাগহেডের মাথা মোটেই জগের মত না, বরং সে সবসময় মাথায় একটা কিম্ভুত টুপি পড়ে থাকে, আর হাতে সবসময় বার্গার নয়তো স্যান্ডউইচ থাকে। বুঝতেই পারছেন কেমন পেটুক সে।


আর্চির আঁকিয়ে বব মন্টানা। তিনি সেই ৭ বছর বয়স থেকে আঁকতে পছন্দ করতেন। ক্যারিয়ারের প্রথমদিকে তিনি পোস্টার আঁকলেও পরে কমিকস এঁকে বিখ্যাত হন।




ফ্যান্টমের বয়স ৪৫০ বছর



‘ফ্যান্টম’ শব্দের মানে হল অশরীরী। এই কমিকসের নায়কের কাজকর্মও ভূতের মতই। সে থাকে আফ্রিকার গহীন জঙ্গলে, আদিবাসী পিগমিদের সঙ্গে। মানুষ মনে করে ফ্যান্টমের মৃত্যু নেই, প্রায় ৪৫০ বছর ধরে সে অমর।


আসল ঘটনা একটু অন্যরকম। ৪৫০ বছর আগে আফ্রিকার উপকূলে একটি জাহাজে জলদুস্যরা আক্রমণ করে। প্রচন্ড লড়াইয়ে সবাই মারা গেলেও বেঁচে যায় জাহাজের মালিকের ছেলে ক্রিস্টফার ওয়াকার। সে তখন তার বাবার হত্যাকারীর খুলি ছুঁয়ে শপথ নেয়, সে সারাজীবন অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে, তার বংশধররাও এই একই পথ অনুসরণ করবে। সেই থেকে শুরু। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তার বংশধররাও এই একই পথ অনুসরণ করে আসছে। কিন্তু সবাই মনে করে ফ্যান্টম একজনই, সে অমর। আসল ঘটনা জানে শুধু জংলীরা।


ফ্যান্টমের জনক লী ফক। ১৯৩৯ সালের ২৮ মে থেকে এই কমিকসের শুরু। লী ফক যখন খুব ছোট ছিলেন তখন তার চোখের সামনে একটি ছিনতাই-এর ঘটনা ঘটে। তখন থেকেই তিনি চিন্তা করেন, যদি এমন কেউ থাকত, যে কিনা সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়বে। এ থেকেই তার মাথায় আসে ফ্যান্টমের ধারণা।


ফ্যান্টম থাকে একটি বিচিত্র খুলি আকৃতির গুহায়। সেখানে আছে ধনসম্পদের এক বিশাল ভান্ডার। আর তার প্রতীক হচ্ছে মড়ার খুলি।


বর্তমান কমিকসগুলি ফ্যান্টমের ২১ তম বংশধরের কাহিনী নিয়ে। তার নাম কিট ওয়াকার। সে যেমন শক্তিশালী, তেমনই অস্ত্রবিদ্যায় পারদর্শী। সে যেমন জঙ্গলে দুষ্টের দমন করে, তেমনি বাইরের বিশ্বেও ঘুরে বেড়ায়।


প্রথম দিকের কমিকসগুলি সাদাকালো ছিল, তাই জামার রং নিয়েও কারো মাথাব্যথা ছিল না। এখন সাধারনত তার আটসাট জামাটির রং বেগুনি বলে মেনে নেয়া হলেও স্ক্যান্ডিনিভিয়ায় নীল, ইটালি, তুরস্ক, ব্রাজিলে লাল এবং নিউজিল্যান্ডে বাদামী রং-এ দেখানো হয়।


লী ফক ‘ফ্যান্টম’ ছাড়াও আরও একটি জনপ্রিয় কমিকসের জনক, সেটি হলো জাদুকর ম্যান্ড্রেক। ম্যান্ড্রেক একজন অত্যন্ত ঝানু একজন জাদুকর, সে তার জাদুর বলে অনেক বদমাশকে ধরিয়ে দেয়।


বাংলা কমিকস নন্টে-ফন্টে





পশ্চিমবঙ্গের এক মফস্বল শহরের বোর্ডিংহাউস। অনেকের সঙ্গে সেখানে ১৫-১৬ বছরের দুটি ছেলে থাকে। পড়ালেখার পাশাপাশি তাদের বুদ্ধিদীপ্ত কাজ সবাইকে বেশ আনন্দ দেয়। তবে তাদের শত্রু একজনই। তার নাম কেল্টু। সবাই ডাকে কেল্টুদা।


এতক্ষণে নিশ্চই বুঝে ফেলেছ কাদের কথা আমরা বলছিলাম। এরা হলো তোমাদের অতি পরিচিত নন্টে আর ফন্টে। এদের মাথায় সব সময় দুষ্টমি বুদ্ধি গিজগিজ করে। তবে তা কখনো কারো অমঙ্গল করার জন্য নয়। এমনি মজা করার জন্য। কিন্তু কেল্টুটা খুব বদ। সে খুবই লোভী। সবসময় নন্টে-ফন্টের খাবার চুরি নয়তো বিভিন্নভাবে তাদেরকে বোর্ডিং-এর সুপারিন্টেন্ডেন্ট স্যারের কাছে ধোলাই খাবার ব্যবস্থা করে। প্রায়ই সফল হলেও শেষমেষ নিজের গর্তে সে নিজেই পড়ে। তবে ছাত্র হিসেবে সে খুবই খারাপ। সে একই ক্লাসে পরপর ছয়বার ফেল করেছে।


নন্টে-ফন্টের স্রষ্টা নারায়ন দেবনাথ। প্রথমে এটি মাসিক পত্রিকা ‘কিশোর ভারতী’-তে ধারাবহিক কমিকস আকারে ছাপা হলেও পরবর্তীতে তা বই আকারে বের হয়। নন্টে-ফন্টে ছাড়াও তিনি আরো যে সব মজার মজার চরিত্র সৃষ্টি করেছেন সেগুলো হল ‘বাটুল দ্যা গ্রেট’ এবং ‘হাদা-ভোদা’। আর নন্টে-ফন্টে সর্বপ্রথম রঙ্গিন আকারে বের হয় ২০০৩ সালে। তখন নন্টের শার্টের রং হয় কমলা আর ফন্টের শার্টের রং হচ্ছে নীল। পোশাকে যাই পার্থক্য থাক না কেন, তাদের আচার-আচরণে খুবই মিল। তারা যা চিন্তা করে, একই সঙ্গে চিন্তা করে। তাদের চেহারাতেও বেশ মিল রয়েছে। শুধু একটাই অমিল সেটা হচ্ছে চুলে। নন্টের চুলের সামনেটা বেশ চোখা আর তার পেছন দিক দিয়ে একটা টিকলির মতো অংশ বের হয়ে থাকে। অন্যদিকে ফন্টের চুল ছোট ছোট।


নন্টে-ফন্টে কমিকসের আরেকটি মজার চরিত্র হচ্ছে সুপারিন্টেন্ডেন্ট স্যার। তিনি বেশ মোটা এবং মাথায় টাক। বেজায় অলস এবং খেতে ভালোবাসেন। বোকামি করে কেল্টুকে তিনি বিশ্বাস করলেও পরে আবার তাকে ধরেই ইচ্ছেমত পিটুনী দেন। যারা নন্টে-ফন্টে পড়েছ তারা তো জানোই তার পিটুনী দেয়ার পদ্ধতিগুলো কত মজার।




নোট ঃ এইটা রীতিমতো একটা কপি-পেষ্ট পোষ্ট - বিডিনিউজ এর কিডজ পাতা থেকে। পড়ে আমার ভাল্লাগছে, তাই অন্যদের জন্যে শেয়ার করলাম। কারো বিরক্তি উৎপাদন করলে দুঃখিত।














উইনি দ্যা পু এবং উইনির গাধা




উইনি দ্যা পু
ওয়াল্টার ডিজনির একটা ক্যারেক্টার।





উইনির একটা গাধা আছে, সব সময় তার মন খারাপ থাকে






কারণ তার ভাগ্য খারাপ !


সব সময় কেন যেন শুধু তার মাথার উপরেই একখন্ড মেঘ ঝুলে থাকে ! সেই মেঘ থেকে আবার কথা বার্তা ছাড়া মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি পরে তাকে ভিজিয়ে দিয়ে যায়।





সব সময়ই দেখা যায় সবুজ প্রান্তরে সবাই ঝকঝকে মিষ্টি রোদ উপভোগ করছে...তার ভেতরে এক পশলা বৃষ্টি অনিবার্যভাবে একমাত্র উইনির গাধাটাকেই ভিজিয়ে দিয়ে যায় !!!





নিজেকে উইনির গাধার মতোই লাগে !


শুধুমাত্র আমার ভাগ্যেই কেন যেন ভাগ্য খারাপ পরে !!!




আদি ও অকৃত্রিম সুকুমার রায়

হাঁস ছিল সজারু, (ব্যাকারণ মানি না),
হয়ে গেল "হাঁসজারু" কেমনে তা জানি না।


undefined


বক কহে কচ্ছপ - "বাহবা কি ফুর্তি !
অতি খাস আমাদের বকচ্ছপ মূর্তি।"





টিয়ামুখো গিরগিটি মনে ভারি শংকা-
পোকা ছেড়ে শেষে কিগো খাবে কাঁচা লংকা?





ছাগলের পেটে ছিল কি জানি কি ফন্দি,
চাপিল বিছার ঘাড়ে, ধড়ে মুড়ো সন্ধি !





জিরাফের সাধ নাই মাঠে ঘাটে ঘুরিতে.
ফরিঙের ঢং ধরি' সেও চায় উড়িতে।





গরু বলে, "আমারেও ধরিল কি ও রোগে?
মোর পিছে লাগে কেন হতভাগা মোরগে ?"





হাতিমির দশা দেখ, - তিমি ভাবে জলে যাই,
হাতি বলে, "এই বেলা জঙ্গলে চলো ভাই।"





সিংহের শিং নেই, এই তার কষ্ট-
হরিণের সাথে মিলে শিং হল পষ্ট।




সুকুমার রায় কে বলা হয় ননসেন্সে'র জগতের একাধিপতি - যদিও আমি তা মানতে রাজি নই... সুকুমার রায়ের যে ছড়াটা আমি সবচেয়ে বেশি বার পড়েছি (আবৃত্তি করতে গিয়ে) সেইটা হলো "খিচুরি"। তো এই ছড়াটা কি আপনার কাছে ননসেন্স মনে হচ্ছে? এই ২০১০ সালে দাড়িয়ে ? (যখন লেখা হয়েছিল তখন অবশ্য ননসেন্স মনে হওয়াই স্বাভাবিক ছিল - সাধারণ মানুষ তো আর কবি-শিল্পিদের মতোন ভবিষ্যত দ্রষ্টা নন)... এখন এই ২০১০ সালে এসে রিমিক্স গান ছাড়া কোন আসরটা জমে? একটার সাথে আরেকটা গানের ধড়ে মুড়ো সন্ধি হয়ে কি সব চমৎকার চমৎকার যুগ-জয়ী সংগীত তৈরী হচ্ছে (যুগ-জয়ী গান নয় - রিমিক্সে'র ক্ষেত্রে গানটা সাধারণত পুরাতন গানই বেশি প্রেফার করা হয়)...

নোট ঃ এই পোষ্টে ব্যাবহৃত প্রতিটি স্কেচই আদি ও অকৃত্রিম সুকুমার রায়ের করা।





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন