ফেব্রুয়ারী আসলেই আমার ভেতরের শিশুটা খলবলিয়ে ওঠে কিশোরটা ছটফট করে ওঠে
বাড়ির বাইরে বের হলেই বইমেলায় যেতে ইচ্ছে করে - সদলবলে
রিক্সা নিয়ে অফিসে যাওয়ার সময় মাঝে-মধ্যেই ভুল হয়ে যায়
রিক্সাওয়ালাকে বলে ফেলি টি.এস.সি. যাও ভুল করে
প্রতিদিন পত্রিকা দেখে নতুন বইয়ের তালিকা করি মনে মনে
হিসেব মেলাই পকেটের সাথে সমন্বয় করে দেখি কয়টা কেনা যাবে।
নতুন বইয়ের গন্ধ আমাকে মাতাল করে তোলে ফেব্রুয়ারী আসলেই
ভাতের থালায় ধোয়া ওঠা ভাতের ধোয়ায়, চায়ের কাপে, রুমালের ভাজে
আমি নতুন বইয়ের গন্ধ পাই সারাক্ষণ অকারণ ফেব্রুয়ারীতে
আমার যে পাঞ্জাবীতে বইমেলা ফেরত হুমায়ুন আজাদের রক্ত লেগে আছে
আমার যে জিন্স প্যান্টে সোহরোয়ার্দী উদ্যানের ঘাসের শিশির লেগে আছে
সিগেরেটের ধোয়ার গন্ধে যে রুমালটা আচ্ছন্ন হয়ে আছে - এখনো, এতো দিন পরেও
ফেব্রুয়ারী আসলেই আমার সেই পাঞ্জাবীটার কথা জিন্স প্যান্টটার কথা
রুমালটার কথা উদ্যানের ঘাসের কথা বইমেলার ধুলা ও ধুম্রজালের কথা
মনে পড়ে যায়। আমি ভুলে যাই ইচ্ছে হলেই এখন আর যেতে পারবো না
যাওয়া যাবে না - মেলার দিকে, লিটেল ম্যাগাজিন প্রাঙ্গনে
অনেক পিছুটান পেটের টান আমাকে
টেনে এনেছে অনেক দুরে, দুরের শহরে - পরিচিত পরিমন্ডল থেকে
বই মেলাতে যেতে চাইলে এখন আমাকে এক দিনের বাস জার্নি করতে হবে।
নোটঃ লেখার বিষয় বস্তু বিবেচনা করলে শিরোনামটা উদ্ভট মনে হতে পারে... হওয়াটাই স্বাভাবিক... ৫০/৬০ এর দশকে ব্রিটেনে ধর্ষণ বিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে এই উদ্ভট শ্লোগানটি বিভিন্ন মেট্রো স্টেশানে লাগানো বিলবোর্ডে শোভা পেত... এখন এই ২০১০ সালে এসে আমি যখন জীবিকার প্রয়োজনে ঢাকার বাইরে থাকি...প্রতিদিনই সন্ধ্যার শাহবাগ কে মিস করি... কিন্তু ফেব্রুয়ারী আসলে বিষয়টা মিস করার চেয়ে বেশি কিছু হয়ে ওঠে... মনে হয় চাকুরী আমার ভেতরের আড্ডাবাজ মানুষটাকে প্রতিদিন ধর্ষণ করছে... আর আমি কোন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছি না... শিরোনামের শ্লোগানটির পরামর্শ অনুশারে বিষয়টা এনজয় করার চেষ্টা করেও দেখেছি... আসলে সম্ভব হয় না... ভুলে থাকা ... আড্ডা... নতুন বইয়ের ঘ্রাণ... লিটেল ম্যাগাজিন প্রাঙ্গণের রাগী যুবকদের চেহারা...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন